March 24, 2023, 10:10 am

দুর্গাপুরে সাংবাদিককে ‘কুত্তার বাচ্চা’ গালি দিল প্রধান শিক্ষক

কলিহাসান,দুর্গাপুর(নেত্রকোণা)প্রতিনিধি:
শিক্ষার্থীদের মারধর,অসদাচরণ ও পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কম দেয়া,বিভিন্ন অযুহাতে অতিরিক্ত ফি আদায়, অবহেলায় স্কুলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়া ও বাৎসরিক বরাদ্ধ নয়-ছয় করে অর্থ আত্নসাৎ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসানের বিরুদ্ধে। ওইসব অনিয়মের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য জানতে চাইলে সাংবাদিককে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি হলেন দুর্গাপুর উপজেলার এম.কে.সি.এম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসান। প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে নানান তাল বাহানায় প্রশাসনিক কার্যক্রম সহ ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক সকালের সময় উপজেলা প্রতিনিধি শান্ত তালুকদার।

ওই শিক্ষকের অপসারণের দাবীতে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছেন ঐ স্কুলের শিক্ষার্থী ও অবিভাবকরা। এর আগেও বেশ কয়েকবার স্থানীয় সচেতনমহল সহ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও আলোচনায় বসেছেন। তবে গেল ২৮ শে জুন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দাবী মেনে নিয়ে এই স্কুল থেকে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করে অন্য স্থানে চলে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি’র ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরে যাননি। সেখানে নতুন করে প্রধান শিক্ষক আসতে পারছেন না। একজন দায়িত্বশীল প্রধান শিক্ষক না থাকায় যেমন স্কুলের পড়াশোনার মান খারাপ হচ্ছে পাশাপাশি স্কুলের দীর্ঘদিনের সুনামও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি ৪ মাস যাবত স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করার প্রমাণ রয়েছে, অথচ দু-জন সহকারী শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কোন অদৃশ্য শক্তির বলে তিনি এমনটা করে যাচ্ছেন তা জানতে চায় শিক্ষক শিক্ষাথর্ী অভিভাবক ও সচেতন মহল।

বিদ্যালয়ে ২১১জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতিদিন উপস্থিত হয় ৭০/৭৫ জন, কিন্তু টিফিন ভাউচারে সকল ছাত্রকেই উপস্থিত দেখানো হয়। তিনি অসুস্থ্য থাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এই নামকরা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ল্যাব নেই,বিজ্ঞান গবেষণাগার নেই। এইসব সরঞ্জাম কেনার জন্য সরকারী বাজেট বরাদ্ধ থাকলেও এ খাতে খরচ না করে তিনি বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে ময়মনসিংহ বিভাগের ডিডি স্কুলে উপস্থিত হয়ে এ সকল অনিয়মের তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হাসান অত্র বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় আশানুরূপ শিক্ষার পরিবেশ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে টালবাহানা করে আসছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। এতে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান থেকে অভিভাবকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এদিকে বিদ্যালয়ের স্কুল শিক্ষক সহ মাঠে থাকা শহীদ মিনারটি ও অপরিষ্কার অপরিছন্ন। এছাড়াও স্কুল মাঠে গরু-ছাগল চারণ করা হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অশিক্ষার্থীর অসংখ্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে থাকা আলমগীর হাসান শিক্ষার্থীদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করেণ, শিক্ষার্থীদের মারধরও করেণ। যেসব ভাষায় গালাগাল করেণ তা বলার মতো না। এই বিদ্যালয়ে আমাদের সন্তানের পড়াশোনার ভালো পরিবেশ দেখছি না। শুধু তাই নয় আমরা অভিভাবকরা কখনও কখনও স্কুলে গেলে আমাদের সাথেও খারাপ আচরণ করেণ তিনি।

এ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস.এম আলমগীর হাসান জানান, আমার বিরুদ্ধে নানান বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করেছে শান্ত তালুকদার। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পরে সে আমার বাসায় এসে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আর লিখবে না। পজিটিভ রিপোর্ট লিখে আমাকে ভাইরাল করে দিবে। সাংবাদিককে কুত্তার বাচ্চা বলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সে আমার ছাত্র বটে। আমি রাগের মাথায় সেটা বলে ফেলেছি। যেটি আমার বলা ঠিক হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন


© All rights reserved © seradesh.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD