March 25, 2023, 6:57 am

শ্রীমঙ্গলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক প্রবাসী ও তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সহরশ্রী গ্রামে ঘটেছে। ওই এলাকার কয়েছ মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তির শ্রীমঙ্গল থানায় দায়েরকৃত মামলায় প্রবাসী সুবাহান মিয়া এখন জেল হাজতে আছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েছ মিয়া বাদী হয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রবাসী ছুবান মিয়া ও তার স্বজন অয়তুন মিয়া (৫০), আশিক মিয়া (৩৫),হাসিম মিয়া (৪০), রেজাক মিয়া (৪২), রোমান মিয়া (৩৬) মিলন মিয়া (৫২) এর ওপর বাঁশ ও গাছ কাটার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গেলে মামলায় উল্লেখিত আসামিগণ শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের মির্জাপুর বিটের ইনচার্জ
এ আই মো.জামাল উদ্দিনের উপর অভিযোগ এনে বলেন, তাদের উপর দারিকৃত মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কয়েছ মিয়ার সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। তবে বাঁশ ও গাছ কাটা এমনকি মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। এসআই মো. জামাল উদ্দিন কয়েছ মিয়ার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। তারা বলেন, এসআই জামাল উদ্দিন টাকা খেয়ে গত ১৫ দিনে আমাদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রেকর্ড করেন।

তারা আরো বলেন, কয়েছ মিয়া মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন আমরা নাকি তার জায়গা থেকে ৫০ টি বাঁশ এবং বিভিন্ন প্রজাতির ১০টি গাছ কেটে নিয়ে যাই। তাছাড়া মামলার
২ নং আসামি প্রবাসী ছুবান মিয়া না কি কয়েছ মিয়ার স্ত্রীর চুল ও কাপড় চোপড় ধরে টানাটানি করে শ্লীলতাহানি করেছেন।
এ বিষয়গুলো সত্য না মিথ্যা তা সরজমিনে এসে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করেই মামলা রেকর্ড করে ২ নং আসামি প্রবাসী চুবানো মিয়াকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।

তারা আরো উল্লেখ করেন এ ধরনের ন্যাক্কারজন মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের ফাঁসানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করব এবং আদালতকে বলব সঠিক তদন্ত করে যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের যেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। অযথা যেন কাউকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি না করা হয়।

কয়েছ মিয়ার ভাতিজা মো. শামীম মিয়া বলেন আমাদের এখানে গাছ কাটা বাঁশ কাটা বা মারামারি এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমার চাচা কয়েছ মিয়া তাদের বিরুদ্ধে অযথাই মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এ বিষয়ে একই কথা বলেন কয়েছ মিয়ার আরেক ভাতিজা মনির মিয়ার ছেলে টুটই।

স্থানীয় মুরুব্বি ও সাবেক মেম্বার মুহিত পাল বলেন কয়েছ মিয়ার সাথে প্রবাসী ছুবান মিয়া গংদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে বলে জানি। তবে কারো জায়গা জমি থেকে বাঁশ, গাছ কাটা বা মারামারির কোন ঘটনা আমরা শুনিনি।

মামলার ৩ নং সাক্ষী মছদ্দর আলী বলেন অয়তুন মিয়া, ছুবান মিয়া ও আশিক মিয়াদের সাথে কয়েছ মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি আমরা জানি। এই বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথাও শুনেছি। তবে বাঁশ ও গাছ কাটা এবং মারামারি হয়েছে বলে কোন কিছু দেখিনি বা তেমন কিছু জানিও না। তিনি বলেন আমাকে যে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে সে বিষয়েও আমি অবগত নই।

মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিছলু আহমেদ চৌধুরী বলেন এই দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছে। কয়েছ মিয়া আমাকে তার জায়গা থেকে বাঁশ কাটার কথা জানিয়েছে তবে গাছ কাটা ও মারামারির বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।

মামলার বাদী কয়েছ মিয়া বললে, আমি যাদেরকে আসামি দিয়েছি তারা দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে আমার রেকর্ডীয় জমি জবরদখল করে রেখেছে। তিনি বলেন আমার জায়গা থেকে তারা প্রায়ই গাছ ও বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। তারা আমার এখান থেকে গাছ ও বাঁশ চুরি করে নিয়ে ঘর নির্মাণ করেছে। আমি কোন উপায় না পেয়ে আইনের ধারস্থ হয়েছি।

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের মির্জাপুর বিটের ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কারো কাছ থেকে টাকা খেয়ে বা অতি উৎসাহী হয়ে মামলা রেকর্ড করিনি। বাঁশ ও গাছ কাটার অভিযোগ হাতে পেয়ে তা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে মামলাট রেকর্ড করা হয়েছে।

 

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

নিউজটি শেয়ার করুন


© All rights reserved © seradesh.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD