March 25, 2023, 8:29 am
এ,কে,আজাদ,রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে দুদিন ধরে বাড়ির মূল ফটকে স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন রায়হান আলী নামের এক যুবক।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে দুদিন ধরে বাড়ির মূল ফটকে স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন রায়হান আলী নামের এক যুবক।
এ প্রতিনিনিক জানায়,ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে দুদিন ধরে বাড়ির মূল ফটকে স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন রায়হান আলী (২৭) নামের এক যুবক। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে খড়কুটো বিছিয়ে বসে আছেন তাঁরা।
এদিকে মূল ফটক তালাবন্ধ রেখে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়ির ভেতরেই রয়েছেন। পরিবার বলছে, পরিবারের কথা না শোনা ও সম্মানহানি করার কারণে তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ ঘটনা ঘটছে উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উজিরমুনি গ্রামে। রায়হান আলী ওই গ্রামের আইজুল ইসলাম নামের কাঠমিস্ত্রির ছেলে। তিনি ৬ মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। মালয়েশিয়ায় ৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রায়হান তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাবার বাড়ির গেটের পাশে খড়কুটো বিছিয়ে বসে আছেন। এলাকার লোকজন তাদের দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।
বাড়ির পেছনের দিকে থাকা একটি ছোট দরজা দিয়ে প্রয়োজনে যাতায়াত করছেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। এরপর সেটিও তালাবন্ধ করে রাখছেন।
বাড়ির মূল ফটকের সামনে এ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় রায়হানের। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালীন প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি।
সেই টাকা দিয়ে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরেছে। বাড়ি নির্মাণ করেছে। বাবা ও তিন ভাই বাড়ির পাশে একটি করাত কল দিয়েছে। আমি বাড়িতে ফেরার পর আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দিয়েছে।
শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে সেটাও বাবাকে দিয়েছি। এখন বাবা প্রায় ৩ মাস হলো তুচ্ছ ঘটনায় স্ত্রীসহ আমাকে বের করে দিয়েছে। আর বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না। স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় যাব? তাই বাড়ির গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি।’
রায়হানের আরও অভিযোগ, ‘বিদেশ থেকে আয় করে যখন টাকা দিয়েছিলাম, তখন আমি ভালো ছিলাম। এখন বাড়িতে ফেরার পর আমি সবার কাছে খারাপ হয়ে গেছি। গতকাল থেকে বাড়ির লোকজন মারপিট করে এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি ও আমার স্ত্রী যাইনি।’
এদিকে রায়হানের সঙ্গে কথোপকথনের আধঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মিঞা। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এর আগেও বাবা–ছেলের মধ্যে ঝগড়া ঘটেছিল। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক ধরনের মীমাংসা করে দেওয়া হয়। তবে সেটা তাদের মনঃপূত হয়নি। তবে রায়হানকে আবার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান চেয়ারম্যান।
ভুক্তভোগী রায়হানের মা, মামা ও মামির সঙ্গে কথা হলে তারা প্রত্যেকেই অভিযোগ করে জানান, রায়হান তাদের কথা শোনেন না। তাই তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রায়হানের বাবা আজিজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেককে বলেন, ‘ছেলে ও বউমাকে বাড়িতে রাখব না। এ জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৪ শতক জমি রেজিস্ট্রি ও ১ লাখ টাকা দিয়েছি অন্যস্থানে বাড়ি করার জন্য। ছেলে আমার ও আমার বাড়ির লোকজনের সম্মান রাখেনি। ওই ছেলেকে আমি ঘরে তুলব না।’